মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০২১

কারিন শয়তান জিন প্রত্যেক মানুষের ঘাড়ে থাকে।


প্রত্যেক মানুষের জন্ম নেয়ার সাথে সাথে একটি শয়তান জিন নিয়োজিত হয় এবং সেই শয়তান জিন মানব সন্তানকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট করার জন্য চেষ্টা করেন। 

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, 
যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে তার চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সেই শয়তান হয় তার সঙ্গী। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে চলতে বাধা দান করে থাকে। আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে। (সূরা  আয্-যুখরুফ:৩৬-৩৭)

হাদিসে এসেছে,  
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই একটি শয়তান নির্ধারিত  রয়েছে। সহাবাগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সাথেও কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার সাথেও শয়তান রয়েছে। তবে তার মোকাবেলার জন্য আল্লাহ আমাকে সাহায্য করেছেন। এখন আমি তার থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদে আছি। এখন সে আমাকে কল্যাণকর বিষয় ছাড়া কখনও অন্য কিছুর নির্দেশ দেয় না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭০০১)   

এছাড়াও আরেকটি হাদিসে কারিন জিনের কথা এসেছে। এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস৷ কেননা, এখান থেকে আমরা বুঝতে পারবো কিভাবে কারিন নামক শয়তান জিন আমাদের কে  সর্বদা পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করে এবং কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে৷ 

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহধর্মিণী আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) থেকে বর্ণিত: 
তিনি বলেন, কোন এক রজনীতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছ থেকে বের হলেন। তিনি বলেন, এতে আমার মনে কিছুটা অহমিকা আসল। তারপর তিনি এসে আমার অবস্থা অবলোকন করে বললেন, হে ‘আয়েশা! তোমার কি হয়েছে? তুমি কি ঈর্ষাপরায়ণ হয়েছো? 

উত্তরে আমি বললাম, আমার মত মহিলা আপনার মত স্বামীর প্রতি কেন ঈর্ষাপরায়ণ হবে না? এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার শয়তান মনে হয় তোমার কাছে এসেছে? তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার সঙ্গেও কি শয়তান থাকে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তারপর আমি বললাম তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, প্রত্যেক মানুষের সাথেই কি শয়তান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সঙ্গেও কি শয়তান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে। তবে আল্লাহ তায়ালা তা র মোকাবেলার জন্য আমাকে সাহায্য করেছেন। এখন তার থেকে আমি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদে আছি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭০০৩)

অতএব,এই আর্টিকেল পড়ে আমরা কারিন শয়তান সম্পর্কে খুব সহজভাবেই জানতে পারলাম। এই শয়তান মূলত আমাদের কে বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট করে এবং আমাদের দিয়ে পাপ কাজ করিয়ে থাকে নানারকম কুপরামর্শ দেয়ার মাধ্যমে। আমাদের কে এই শয়তান থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে যেন এই শয়তান থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে হেফাজত করেন। "আমিন" 


শেয়ার করুন

Author:

আমি একজন অতি সামান্য মানুষ। পেশায় একজন লেখক,ব্লগার এবং ইউটিউবার। লেখালেখি করতে খুব ভালো লাগে। আমার এই সামান্য প্রয়াসের মাধ্যমে মানুষের কিছু শেখাতে পারা ও বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।

0 coment rios: